জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ইতিহাসে নজিরবিহীন আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো শীর্ষ পর্যায়ের আয়কর ক্যাডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। বহু নাটকীয়তা, অনুশোচনা এবং ব্যাচ ধরে ‘ক্ষমা চাওয়ার’ পরও রক্ষা পেলেন না আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা কর্মকর্তারা।
এনবিআর মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এক আদেশে ৮ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত কর্মকর্তা মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা।
আন্দোলন শুরুর পর সাসপেন্ড হওয়ার ভয়ে অনেক কর কর্মকর্তা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। এমনকি ব্যাচভিত্তিকভাবে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে দুঃখপ্রকাশও করেন তারা। তবে এত কিছুর পরও বরখাস্তের তালিকা থেকে রেহাই মেলেনি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতাদের।
বরখাস্তকৃত কর্মকর্তারা হলেন- কর অঞ্চল-২ এর বিভাগীয় প্রতিনিধি (যুগ্ম কর কমিশনার) মাসুমা খাতুন, কর অঞ্চল-১৫ এর যুগ্ম কর কমিশনার মুরাদ আহমেদ, কুষ্টিয়া কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, নোয়াখালী কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, কক্সবাজার কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মো. আশরাফুল আলম প্রধান, খুলনা কর অঞ্চলের উপ কর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম, রংপুর কর অঞ্চলের উপ কর কমিশনার মোসা. নুশরাত জাহান শমী ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের উপ কর কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল।
এনবিআর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান সই করা ও জনস্বার্থে জারি করা এসব প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ২২ জুন জারিকৃত বদলির আদেশ অবজ্ঞাপূর্বক প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায় তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৯ (১) ধারা অনুযায়ী তাদেরকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপূর্বক চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তারা সাময়িক বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
এর আগে ২৪ জুন আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে দুটি বদলি আদেশকে ‘প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক’ দাবি করে তা ছিঁড়ে ফেলে প্রতিবাদ জানান সংস্থটির কর্তা-কর্মচারীরা।