সবার আন্তরিকতায় এ মাসেই জুলাই সনদ ঘোষণা হবে বলে আশা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের। বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের অষ্টম দিনের সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সংস্কারে জনগণের প্রত্যাশা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কখনো কখনো আমরা অগ্রসর হই। কখনো কখনো আমরা যতটা অগ্রসর হতে চাই, ততটা না পারায় খানিকটা হতাশ হই। কিন্তু তারপরেও আমরা চেষ্টা করলে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ই একটা সনদের জায়গায় যেতে পারব। এ ক্ষেত্রে আপনাদের সবার প্রচেষ্টা, সবার আন্তরিক সহযোগিতাটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিনিস।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘এক বছর আগে যখন আমরা সবাই মিলে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল, দলের ঊর্ধ্বে উঠে সব রকম বাধা বিঘ্নকে মোকাবিলা করে রাজপথে নেমেছিলেন। যে অর্জন আমরা করতে চেয়েছি একটি পর্যায়ে অতিক্রম করে আজকে এক বছর পর সমবেত হয়েছি।
রাষ্ট্র কাঠামোর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেন নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়। যেন জীবনের অধিকার সুরক্ষিত হয়। যেন গুম হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বিচারিক হত্যার শিকার না হয়।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, এটা আপনাদের কর্মীদের (রাজনৈতিক দল) অবদান, নাগরিকদের অবদান, সকল রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের সাফল্য। কিন্তু সেই সাফল্য শুধুমাত্র একপর্যায়ে থেমে গেলে হবে না। তাকে সুরক্ষিত করতে হবে এবং সেই সুরক্ষার উপায় আমরা যেন সংস্কারের কার্যক্রমে এগিয়ে যেতে পারি। সেই চেষ্টাতেই রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করছে বলে জানান তিনি।
সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দলগতভাবে, জোটগতভাবে, ব্যক্তিগতভাবে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় আমরা লক্ষ্য করেছি কমিশনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ করেছেন যেগুলো আমাদের আশাবাদী করছে। আমরা মনে করি যে এই জায়গায় আমরা পৌঁছাতে পারব। কারণ আমাদের সকলেরই আন্তরিক প্রচেষ্টাটা আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যারা প্রাণ দিয়েছেন বা আহত হয়েছেন, তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপে অংশ নিচ্ছে। প্রতিদিন আমরা অর্জন করছি না। আবার অর্জন করছি, পরস্পরকে জানছি-বুঝছি। সাফল্যের জন্য চেষ্টা করছি। আমি আশাবাদী এক জায়গায় পৌঁছাতে পারব। কেননা যে দায় এবং দায়বদ্ধতা, সেটা আপনারা সকলে প্রাণ দিয়ে অনুভব করেন। আমরা সকলে প্রাণ দিয়ে অনুভব করি। মানুষ সেটা প্রত্যাশা করেন, তারা আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। সেই জায়গায় আমরা সকলে যেন সকলে অগ্রসর হতে পারি। জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে এক জায়গায় যেতে পারব।’