আন্দোলনের সময় সাধারণ মানুষের পক্ষে সরব হয়েছিলেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। গত জুলাই মাসে ছাত্রদের আন্দোলনের সময় সোচ্চার অবস্থান নেয়ার কারণে শাসকদলের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। তবু থেমে যাননি এই অভিনেত্রী। সমাজ ও রাজনীতির বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশ্যে মত জানিয়ে গেছেন, তুলে ধরেছেন নিজের অবস্থান, স্বপ্ন দেখিয়েছেন নতুন এক বাংলাদেশের।
তবে এবার দেখা গেল ভিন্ন এক ফারিয়াকে—হতাশ, ক্ষুব্ধ আর ক্লান্ত। সম্প্রতি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাসে দেশের বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি। শবনম ফারিয়া লেখেন, “এমন এক দেশে জন্ম, কার কাছে বিচার দেবো জানি না। এক পার্টির বড়রা টাকা মেরে দেশ ছাড়ে, আর তাদের ছোট অনলাইন কর্মীরা ইতিহাস বিকৃত করে অপমান করে জুলাইকে। বাকি সবাই চাঁদাবাজি আর হাদিয়া নিয়ে ব্যস্ত—নিজের রাস্তা ঠিক করার জন্য একে অন্যকে কামড়ে যাচ্ছে।”
নিজেকে সাধারণ নাগরিকের প্রতিনিধি বলে দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষ, মাঝখানে দাঁড়িয়ে এই তামাশা শুধু চুপচাপ দেখে যাই।” শুধু রাজনীতি নয়, দেশের আন্তর্জাতিক অবস্থান ও ভ্রমণসংকট নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছেন এই অভিনেত্রী। বাংলাদেশি পাসপোর্টের সীমাবদ্ধতার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি লেখেন, “এই সবুজ পাসপোর্টে কেউ ভিসাও দিচ্ছে না! কই যাবো আমরা?”
রাজনীতি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মত দিলে যে প্রতিক্রিয়া আসে, তাও তুলে ধরেছেন ফারিয়া। বলেন, “এক পক্ষ বলে, ‘ডলার খেয়ে ফেলেছেন’, আরেক পক্ষ বলে, ‘আপনি তো ১৬ বছর কিছু বলেননি!’ কার কথায় বিশ্বাস রাখবো?” সবশেষে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানিয়ে ফারিয়া লেখেন, “হে আল্লাহ, রাজনীতি নামক এই অভিশাপ থেকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে রক্ষা করো। আমিন।”
এই পোস্টে এক অনুসারী কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন, “আপনারাই তো এই পরিস্থিতি চেয়েছিলেন। এখন নাটক করছেন। নাটকের লোকদের এমনই মানায়।” জবাবে শবনম ফারিয়া লেখেন, “আপনাদের বড়রা যদি চুরি আর দমন-পীড়ন কম করতো, আর জুলাইতে পোলাপানদের গুলি না করতো, তাহলে আমাদের এই অবস্থান নিতে হতো না।”
শবনম ফারিয়ার এই স্ট্যাটাসে স্পষ্ট হয়েছে নাগরিক ক্ষোভ, হতাশা এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি হলেও এতে প্রতিফলিত হয়েছে এক সচেতন শিল্পীর ভেতরের ক্ষরণ এবং দেশের নাগরিক হিসেবে গভীর উদ্বেগ।